দুবাই ভ্রমণ
পারিবারিক ভাবে দুবাইয়ের সাথে একটা সম্পর্ক থাকায় ছোট বেলা থেকে দুবাই যাওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। সুযোগটা ও চলে আসলো ২০১৪ সালে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে পরিবারের সবার পাসপোর্ট করা হয় দুবাই যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু তখন আর যাওয়া হলো না। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ১৬ই ডিসেম্বর রাতে আমি একা চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে দুবাই যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হই। জীবনের প্রথম বিমানবন্দরের ভিতরে ঢুকলাম তাও একা। বোর্ডিং পাসের জন্য লাইনে দাড়ালাম সবার প্রথমে।
ঐখানে দায়িত্বরত এক অফিসার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কোথায় যাবা.??, বাড়ি কোথায়.? নতুন যাচ্ছো নাকি..? আমি আমার পরিচয়টা দিয়ে বললাম বাবার কাছে ঘুরতে যাচ্ছি। আর একা এবং নতুন যাচ্ছি। এটা শুনে আমাকে বলেন যে তুমি পাশে দাঁড়াও। আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম আর সবাইকে বোড়িং পাশ দিয়ে বিধায় করতেছে। সবার প্রথমেে থেকেও আমাকে শুধু শুধু অপেক্ষা করিয়ে রাখলো। খুব অসহ্য লাগতেছিল, মনে মনে বকা দিলাম ওদেরকে। তারপর ভারী একটা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে শাহ আমানত বিমানবন্দরের লিফট দিয়ে ইমিগ্রেশনের ঐখানে লাইনে দাঁড়ালাম। বিশাল লাইনের পিছনে দাঁড়িয়ে যখন ইমিগ্রেশন পুলিশের সামনে আসলাম পাসপোর্ট সিল মেরে ছবি তুলে আমাকে সহ আরো দুইজনকে একটা ছোট রুমে নিয়ে গেল।
অবশেষে নামলাম সারজাহ বিমানবন্দরে। নেমে একটা লোকের মোবাইল থেকে আব্বুকে কল দিলাম। আব্বু বললেন এক্সিট ডোর দিয়ে বের হলেই তাকে দেখতে পাবো। তারপর ইমিগ্রেশনপর জন্য লাইন ধরলাম। কিন্তু যারা নতুন গিয়েছিল সবাইকে একটা রুমে যেতে বললো আরবিতে। আমি বুঝি নি কি বললেন শুধুমাত্র ইংরেজিতে শুনলাম Eye Test করবে আমাদের। তারপর সবার পিছে পিছে গিয়ে Eye Test করে নিলাম। তারপর ঘুরন্ত বেল্ট থেকে ব্যাগ গুলো নিয়ে বের হলাম সবার পিছু পিছু। বাহিরে যাওয়ার আগেই গ্লাস দিয়ে দেখি আব্বু দাঁড়িয়ে আছে।
তারপর আব্বুর সাথে গিয়ে গাড়িতে বসলাম। আব্বু গাড়ি চালাচ্ছেন আর আমি ডানে বামে তাকিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করতেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ দেশের জন্য কেমন একটা শূন্যতা কাজ করলো মনের ভেতর। দেশের কথা ভাবতেই দম বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো। যাই হোক, বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমালাম। পরের দিন আব্বুর সাথে ভোরে উঠেই আমাদের দোকানে গেলাম। আশেপাশের সবকিছু অনেক গুছালো ও পরিপাটি।
অনেকগুলো আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা হলো সবাই সালামি দিলো। বাবার সাথে ঘুরতে যাওয়া হয়েছিল অনেক আরাবিয়ানদের বাসায়। কিংবা দোকানেও অনেক আরাবিয়ানরা এসেছিল। ওরা ও আমাকে টাকা দিলো নতুন ঘুরতে গেলাম তাই। অনেক গুলো টাকা জমা হয়েছিল আমার। যাইহোক বিকালে আব্বুর সাথে নাস্তা করতে গিয়েছিলাম বাংলা ক্যাপেটেরিয়াতে। গিয়ে দেখি অনেক গুলো বাঙালি ও কাকা, মামা, দাদা, ভাইয়া এইরকম সম্পর্কের অনেক মানুষ। সবার সাথে দেখা হলো, কথা হলো। অনেকে অনেক কিছু খাওয়ালো।
আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম আমার কাগজ পত্রেে সমস্যা হলো নাকি। তারপর দেখি ছোট রুমটার মধ্যে একটা মোটা করে পুলিশ বসে আছে। আমাকে বলল দুবাই কেন যাবা, কে থাকে ঐখানে। ঘুরতে যাবো বলাতে বলে যে বাংলাদেশে কি ঘুরার জায়গা কম আছে নাকি। এইটা বলার পর হেসে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো ভয় পেয়েছো.?? আমি বললাম হুম। বলে যে যাও ভয়ের কিছু নেই তোমার সাথে মজা করলাম।
এরপর ওয়েটিং রুমে গিয়ে বসলাম। মনে মনে ভাবছি একা কিভাবে বিমানে বসে নিজেকে সামলাবো, ভয় হচ্ছে বিমান ভ্রমণ নিয়ে। একটু পরেই সবাইকে ডাকলো বিমানে ঢুকার জন্য। হ্যান্ড ব্যাগটা নিয়ে বিমানের মধ্যে ঢুকতেছি এমন সময় দেখি সাদা চামড়ার খুব সুন্দরী বিদেশি পরী একটা দাঁড়িয়ে ওয়েলকাম ওয়েলকাম বলছে। ভিতরে গিয়ে বসলাম। পাশের মানুষটার দিকে তাকি সিট বেল্ট বাধাটা শিখে নিলাম। আমার সিট-টা বিমানের জানালার পাশে ছিল। বাহিরে তাকিয়ে সব দেখতে পাচ্ছিলাম। বিমান ছেড়ে দিল, আস্তে আস্তে চলে হঠাৎ খুব দ্রুত বেগে গিয়ে উপরে উঠে গেল। বুকের ভেতরটা ভয়ে কেঁপে উঠলো।
নিজেকে সামলিয়ে নিলাম আর দোয়া পড়তেছিলাম সবার সাথে।
বিমান উপরে উঠে যাওয়ার পর ভয়টা অনেকটা কমে গেল। তারপর ৫ ঘন্টার সময়টা অনেকটা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম। মাঝে মাঝে সিটের উপরে থাকা মনিটরেে দেখছিলাম আমরা কত হাজার ফুট উপরে আছি, কোন দেশের উপরে দিয়ে যাচ্ছি আর কত মিনিটে লাগবে ল্যান্ড করতে সেটা খেয়াল করছিলাম। বিমান যখন দুবাইয়ের আকাশে আসছিলো তখন জানালা দিয়ে নিচের হাজার হাজার সোডিয়াম লাইটের আলো দেখা যাচ্ছিলো। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। খুব সুন্দর ও গুছানো শহরটা রাতের বেলায় অসাধারণ লাগতেছিলো।অবশেষে নামলাম সারজাহ বিমানবন্দরে। নেমে একটা লোকের মোবাইল থেকে আব্বুকে কল দিলাম। আব্বু বললেন এক্সিট ডোর দিয়ে বের হলেই তাকে দেখতে পাবো। তারপর ইমিগ্রেশনপর জন্য লাইন ধরলাম। কিন্তু যারা নতুন গিয়েছিল সবাইকে একটা রুমে যেতে বললো আরবিতে। আমি বুঝি নি কি বললেন শুধুমাত্র ইংরেজিতে শুনলাম Eye Test করবে আমাদের। তারপর সবার পিছে পিছে গিয়ে Eye Test করে নিলাম। তারপর ঘুরন্ত বেল্ট থেকে ব্যাগ গুলো নিয়ে বের হলাম সবার পিছু পিছু। বাহিরে যাওয়ার আগেই গ্লাস দিয়ে দেখি আব্বু দাঁড়িয়ে আছে।
অনেকগুলো আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা হলো সবাই সালামি দিলো। বাবার সাথে ঘুরতে যাওয়া হয়েছিল অনেক আরাবিয়ানদের বাসায়। কিংবা দোকানেও অনেক আরাবিয়ানরা এসেছিল। ওরা ও আমাকে টাকা দিলো নতুন ঘুরতে গেলাম তাই। অনেক গুলো টাকা জমা হয়েছিল আমার। যাইহোক বিকালে আব্বুর সাথে নাস্তা করতে গিয়েছিলাম বাংলা ক্যাপেটেরিয়াতে। গিয়ে দেখি অনেক গুলো বাঙালি ও কাকা, মামা, দাদা, ভাইয়া এইরকম সম্পর্কের অনেক মানুষ। সবার সাথে দেখা হলো, কথা হলো। অনেকে অনেক কিছু খাওয়ালো।
ঘুরাঘুরিঃ
আব্বুর দুবাইতে কনস্ট্রাকশনের কাজ তাই তার সাথে গাড়িতে করে অনেক কাস্টমারের বাড়িতে যাওয়া হলো। পুরো সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমার ঘুরাঘুরি শুরু হলো।
(১) শেখ জাহিদ মসজিদঃ
যাওয়া হলো আবুধাবির শেখ জাহিদ মসজিদে। দৃষ্টি নন্দন স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন মসজিদটি। এক দেখাতে মানুষ মুগ্ধ হয়ে যাবে আমিও মুগ্ধ হয়েছি বারবার। অপরূপ মন মুগ্ধকর কারুকাজ আমার মন ছু্ঁয়ে নিয়েছে।(২) আবুধাবি মেরিনা মলঃ
বিশাল বড় বড় আঁকাবাঁকা দালান পেরিয়ে সমুদ্রের তীরে মেরিনা মলের অবস্থান। অনেক বড় পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে ক্রেতাদের জন্য। আমি আব্বুর ভেতরে গেলাম। অনেক সুন্দর করে সাজানো ও ভালো ভালো প্রোডাক্টস রয়েছে। কিছুক্ষণ বাপ ছেলে ঘুরে খাওয়া খেয়ে অল্প পরিমাণে শপিং করে বেরিয়ে এলাম। পুরো পরিবেশটা অনেক বেশি গুছালো ও নিয়ম তান্ত্রিক দেখে ভালোই লাগলো।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিল্ডিং দেখার জন্য খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। দুবাই মলের মধ্যে দিয়ে হেটে হেটে বুর্জ খলিফার Water Magic এর সামনে দাঁড়িয়ে দেখাটা স্বপ্নের মতো ছিল। ঘাড় টা বাঁকা করে উপরের দিকে তাকিয়ে ১৬৫ তলা স্থাপনা দেখতে হয়েছিল । মনে হচ্ছে উপরে দিকটা মেঘকে বেধ করে উপরে চলে গিয়েছে। তারপর সন্ধ্যায় Water Magic এর কারুকাজ টা দেখে সত্যি অনেক অবাক হয়েছি। পানি দিয়ে এভাবেও বানানো সম্ভব তা কল্পনা ও করিনি কখনো।
তাছাড়া আরো অনেক শপিং মল গুলোতে বাবার সাথে ঘুরতে ও শপিং করতে যাওয়া হয়েছিল । অনেক ভালোই কেটেছিল। আরো ১১ বার যাওয়া হয়েছিল দুবাইতে। পুরো আরব আমিরাতের সব সুন্দর জায়গা গুলোতে আমার ঘুরা হয়েছে। সর্বশেষ মা, ছোট ভাই ও বোন নিয়ে দুবাইতে গিয়েছি ২০১৯ এর রমজানে।
দুবাইয়ের স্মৃতি গুলো কখনো ভূলে যাওয়ার নয়। সত্যিই দুবাই অসাধারণ।
(৩) মরুভূমি ভ্রমণঃ
দুবাইয়ের মরুভূমির উপরে নিজে ড্রাইভিং করলাম। চারদিকে যতদূর চোখ যাচ্ছে শুধুই বালি আর বালি। মাঝে মাঝে কিছু উট দেখা যাচ্ছিলো । গাড়ি থেকে নামলাম, তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির উপরে। বালি গুলো দূর থেকে অনেক সুন্দর লাগছিলো। জীবনে প্রথম মরুভূমির উপরে হেটে মনে মনে অনেক কিছু ভাবতেছিলাম। খুব এনজয় করলাম।(৪) জুমেরা সি-বিচঃ
বিখ্যাত দুবাই শহরের প্রাণ কেন্দ্রে এই সমুদ্র তটটির অবস্থান। সমুদ্রে নামলে পিছনে বুর্জ খলিফার দৃশ্য দেখা যায়। সমুদ্র ততটি খুব পরিষ্কার ও দৃষ্টি নন্দন। কয়েকটি চাচ্চু সহ সমুদ্রে নামলাম। সবাই মিলে ২ ঘন্টার মতো গোসল করলাম খুব মজা হলো।(৫) দুবাই মল ও বুর্জ খলিফাঃ
দুবাইতে যাওয়াটা স্বার্থক হয়েছে এই জায়গাটাতে গিয়ে।পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিল্ডিং দেখার জন্য খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। দুবাই মলের মধ্যে দিয়ে হেটে হেটে বুর্জ খলিফার Water Magic এর সামনে দাঁড়িয়ে দেখাটা স্বপ্নের মতো ছিল। ঘাড় টা বাঁকা করে উপরের দিকে তাকিয়ে ১৬৫ তলা স্থাপনা দেখতে হয়েছিল । মনে হচ্ছে উপরে দিকটা মেঘকে বেধ করে উপরে চলে গিয়েছে। তারপর সন্ধ্যায় Water Magic এর কারুকাজ টা দেখে সত্যি অনেক অবাক হয়েছি। পানি দিয়ে এভাবেও বানানো সম্ভব তা কল্পনা ও করিনি কখনো।
তাছাড়া আরো অনেক শপিং মল গুলোতে বাবার সাথে ঘুরতে ও শপিং করতে যাওয়া হয়েছিল । অনেক ভালোই কেটেছিল। আরো ১১ বার যাওয়া হয়েছিল দুবাইতে। পুরো আরব আমিরাতের সব সুন্দর জায়গা গুলোতে আমার ঘুরা হয়েছে। সর্বশেষ মা, ছোট ভাই ও বোন নিয়ে দুবাইতে গিয়েছি ২০১৯ এর রমজানে।
দুবাইয়ের স্মৃতি গুলো কখনো ভূলে যাওয়ার নয়। সত্যিই দুবাই অসাধারণ।
yeaaa,sob smy achi apnar sathe..
ReplyDeleteIndia jawar por ebong okhanee thakar experience jante Cha...
ReplyDeleteDubai is so beautiful
ReplyDeleteDubai is the best
ReplyDeleteVery nice city in world
ReplyDelete