Translate

Sunday, 15 March 2020

Short Love Story || অসমাপ্ত ভালোবাসা || বাংলা ছোট গল্প || Bangla Love Story

অসমাপ্ত ভালোবাসা

আমাদের গল্পটা শুরু হয় খুব অদ্ভুত ভাবেই। সেদিন বিকেলে আমি টিউশনির থেকে যাচ্ছিলাম। আর হঠাৎ একটা বল এসে আমার মাথায় পড়ে। চোখ খুলেই দেখি একজন দৌড়ে আসছে আমার দিকে আর হাত জোর করে ক্ষমা চাইলো। তখন সে বসে আমার মাথায় বরফ লাগিয়ে দেয়। সেদিনের ঘটনাটির পর প্রায়ই আমাদের চোখে চোখে ভাব আদান-প্রদান হয়।
আস্তে আস্তে দুজনের মনে ভালো লাগা শুরু হলো। একদিন সে সাহস করে বলেই দিলো আমাকে তার ভালোলাগে।  আমারও তাকে অনেক ভালো লাগতো। তাই মোবাইল নাম্বার চাওয়াতে দিয়ে দিলাম। এরপর কথা হতে লাগলো দুজনের। SMS করা হতো নিয়মি,  মাঝে মাঝে দেখা করা বা ঘুরাঘুরিও হতে লাগলো।
এভাবে দুই বছর অতিবাহিত হয়ে গেল। আর এই সম্পর্কের কথা আমার মা ও তার পরিবার  জানতো।
তারপর তার চাকরি হলো আর আমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠালো।  আমার বাসা থেকেও মেনে নিয়েছে, খুব একটা সমস্যা হয় নি।
 মা-বাবার এক মাত্র মেয়ে হওয়ায় সবকিছু না চাইতে পাওয়া হতো। তাই আমার মতামতের গুরুত্ব ছিলো যথেষ্ট।  তাছাড়া সম্পর্কটি হওয়ার আগে স্বভাবতই আমি গোমরা মুখো ছিলাম, কারো সাথে সহজে মিশতাম না। তার সাথে সম্পর্ক হওয়ার পর আমার মাঝে অনেকটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলো মা বাবা। আগের থেকে অনেক হাসি খুশি থাকতে পছন্দ করি, সবার সাথে মিশে হৈ চৈ করি রীতিমতো।  আর তাই  মা বাবা ও অনেক খুশি ছিলেন।
যাইহোক মূল কথায় আসি,
যখন বিয়ের কথা পাকাপোক্ত হলো নিজেকে খুব ভাগ্যবতী ভাবছিলাম।  মনে হলো সব সুখ আমি একা হাতের মুঠোয় করে রেখেছি।  আর তার মধ্যে চলে আসলো বিয়ের দিন। সকাল থেকে সে আমাকে অনেক SMS করতেছিলো আর Countdown করতে লাগলো কখন আমাকে দেখতে পাবে বউয়ের সাজে  খুব কাছে থেকে। 
               
আমিও বউয়ের সাজে তৈরী আর সেও আমাকে জানালো তারা বের হচ্ছে বাসা থেকে। আর একটু পর আমি এসে পৌঁছে যাবো। তোমাকে সারাজীবনের জন্য আপন করে নিবো। 
আমি খুব লজ্জা পেয়ে রেখে দিলাম আর উত্তরটা দেওয়া হয়ে উঠলো না। আমি তৈরী হয়ে বসে আছি, সব আত্মীয় স্বজনরাও এসে গেল। বর যাত্রীও প্রায়ই চলে আসছে শুধু সে আসছে না এখনো। এমন সময় তার বাবার মোবাইলে কল আসলো তাদের গাড়ি নাকি এক্সিডেন্ট হইছে। তারা তিনজন গাড়িতে ছিল সবার খুব খারাপ অবস্থা। কথাটা শুনে পায়ের নিচে থেকে যেন মাটি সরে গেল। হতভম্ব হয়ে কনের সাজে দাঁড়িয়ে আছি। চারপাশে কি হচ্ছে, কে কি বলতেছে কিছুই কানে আসছে না যেন।  

বাবা আমার মাথায় হাত রেখে বলল মা তুই যাবি..?? বাবার স্পর্শ পেয়ে যেন সব শুনতে পাচ্ছি।  

এরপর ছুটে গেলাম তার কাছে। তার পাশে গিয়ে বসলাম হসপিটালের বেড়ে। আমি তার মাথায় হাত দিয়ে বললাম আরে এইটা সামান্য একটু ছোঁট 'ই' না, কিচ্ছু হবে না তোমার৷ ভালো হয়ে যাবা তুমি। কিন্তু আমি জানতাম না যে তার শেষ নিশ্বাস টা শুধু আমাকে দেখার জন্য আটকে ছিলো। 
আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ভালোবাসার চাহনিতে। মৃদু হেসে বলল আজ তোমায় অনেক বেশি সুন্দর লাগতেছে কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দেখো তোমার এই সৌন্দর্যটা আর বেশিক্ষণ দেখার সুযোগ হয়তো হবে না আমার। চোখের পানি চেরে দিয়ে আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো। আর বললো এই হাত কখনো
   ছেড়ে দেওয়ার জন্য ধরিনি,  আমাকে ক্ষমা করে দিও হাতটা শক্ত করে ধরার শক্তিটা আমার মধ্যে আর বেশিক্ষণ নেই আমি জানি।  তোমার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে আমার, আমাকে ছাড়া তুমি অনেক একা হয়ে যাবে। শেষ কয়েকটি মাস তুমি আমাকে ছাড়া একটা মুহূর্তও কল্পনা করতে পারোনি।  
আমি বললাম এভাবে বলো না তোমার কিছুই হবে না।  ডাক্তার বললেন তুমি  খুব তারাতারি ভালো হয়ে যাবে। এই কথা বলার পর একটু মুচকি হেসে আমার মুখে হাত দিয়ে আলতো করে স্পর্শ করে চোখের পাতা গুলো নামিয়ে ফেলল । হাতটা আমি ধরে আছি, ক্রমশ ঠান্ডা হতে লাগলো।  সে চিরতরে চলে গেল আমি সেটা নিজেকে বিশ্বাস করাতে পাচ্ছি না। চুপ করে শুধু তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। 🤐🤐 

        (অসমাপ্ত.....)                                                         


6 comments:

This is very Interesting Blogging Site. I Post Regularly more types of Interesting topics. Stay with me

Lockdown time Daily Routine | Alone life | West Bengal

Daily Routine | Lockdown Time  West Bengal | Alone Life      #Lockdown_Time #Daily_Routine  #Alone_life লকডাউনে আমার যেভাবে সারা...